| |

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের যতকথা: সংসদীয় আসন-১৯৭ (গাজীপুর-৪)

টাইমস-ডেস্ক, গাজীপুর টাইমস;

স্বাধীনতার আগে থেকে এই আসনটি আওয়ামী লীগের নিরাপদ ঘাঁটি। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের জন্মভূমি এই আসনে। সংসদ নির্বাচনে এ আসনে ৬ বার জয়লাভ করেছে আওয়ামী লীগ। আসনটি আওয়ামী লীগের অনেকটা নিরাপদ ও শক্ত ঘাঁটি হলেও দলীয় কোন্দল ও বিভক্তি রয়েছে বলেও জোড় গুঞ্জন রয়েছে।

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ৬৭ হাজার ৩ শত ৯৪ জন। ভোট প্রদান করেন ২ লাখ ২৭ হাজার ৭ শত ৩৭ জন।

ADS BY ADSTERRA

এবার আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এই ‘বিভক্তি আর কোন্দল’ থেকেই সুবিধা নিতে চায় বিএনপি। কিন্তু বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে মৃত্যুবরণ করায় এ আসনে শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে। নেই হেভিওয়েট জনপ্রিয় প্রার্থী।

ADS BY ADSTERRA

২০১৮ সালের নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন ৭ জন। নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের সিমিন হোসেন রিমি , ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির শাহ রিয়াজুল হান্নান, কাস্তে প্রতীকে মানবেন্দ্র দেব, হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলনের নুরুল ইসলাম সরকার, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির জুয়েল কবির, টেলিভিশন প্রতীকে ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট বি এন এফ এর সারোয়ার ই কায়নাত এবং তারা প্রতীকে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জে এস ডির নাজিম উদ্দীন শেখ প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন।

ADS BY ADSTERRA

নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সিমিন হোসেন রিমি বিজয়ী হন । নৌকা প্রতীকে তিনি পান ২ লাখ ৩ হাজার ২ শত ৫৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির শাহ রিয়াজুল হান্নান। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান মাত্র ১৮ হাজার ৫ শত ৮২ ভোট। কারচুপির অভিযোগে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন বর্জন ও ফলাফল প্রত্যাখান করে।

বিচার-বিশ্লেষন:

পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, পঞ্চম ও ষষ্ঠ সংসদে বিএনপি এবং সপ্তম, অষ্টম নবম, দশম ও একাদশ সংসদে আওয়ামী লীগ টানা বিজয়ী হয়।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, গাজীপুর- ৪ সংসদীয় আসনে ১৯৯১ সালের পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৫৯.৮৭% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ ৪১.২৯%, বিএনপি ৪৪.৬৪%, জাতীয় পাটি ১.০৬% জামায়াত ইসলামী ৪.৩৩ % স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ৮.৬৮% ভোট পায়।

১৯৯৬ সালের সপ্তম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৭৮.৮৯% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ ৪৭.৯৯%, বিএনপি ৪২.১৫% জাতীয় পাটি ৪.৯৬%, জামায়াত ইসলামী ২.৯৬% স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ১.৯৪% ভোট পায়।

২০০১ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৭৯.৪৭ % ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ ৫১.২২%, ৪ দলীয় জোট ৪৫.৭৬%, জাতীয় পার্টি ০.৮৪ % স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ২.১৮% ভোট পায়।

২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৮৭.৯৯% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে ১৪ দলীয় জোট ৬২.২০%, ৪ দলীয় জোট ৩৬.২৩% স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ১.৫৭% ভোট পায়।

মনোনয়নের হালচাল:

গাজীপুর- ৪ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন রিমি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আবারও মনোনয়ন চাইবেন। রিমি ছাড়াও আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসাবে মনোনয়ন চাইবেন শহীদ তাজউদ্দীন আহমদের ভাগ্নে কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের উপদেষ্টা ও মরিয়ম ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আলম আহমেদ, কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও কাপাসিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোতাহার হোসেন মোল্লা, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা এ্যাডভোকেট মোমতাজ উদ্দিন মেহেদী, গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এ্যাডভোকেট আমানত হোসেন খান।

বিএনপি থেকে মনোনয়ন চাইবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ এর ছেলে শাহ রিয়াজুল হান্নান।

এছাড়াও মনোনয়নের তালিকায় বিএনপি থেকে কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জামাল উদ্দিন আহমেদ, কাপাসিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আজিজুর রহমান দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন চাইবেন শামসুদ্দিন খান ও মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান।


দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হলে জাতীয় সংসদের ১৯৭তম সংসদীয় আসন (গাজীপুর- ৪) আসনটিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে মনে করেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।

কোন মন্তব্য নেই