| |

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের যতকথা: সংসদীয় আসন-১৯৮ (গাজীপুর-৫)

টাইমস-ডেস্ক, গাজীপুর টাইমস;

গাজীপুর-৫ সংসদীয় আসনটি গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৩৯ থেকে ৪২ নম্বর ওয়ার্ড, গাজীপুর সদর উপজেলার বাড়িয়া ইউনিয়ন এবং কালীগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত। এটি জাতীয় সংসদের ১৯৮ তম আসন।

২০০১ সালের বাংলাদেশ আদমশুমারীর পরিসংখ্যান অনুযায়ী জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায়। পরবর্তীতে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জনসংখ্যার ভিত্তিতে সংসদের নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুনঃনির্ধারণ করার পর গাজীপুর-৫ আসনটি সৃষ্টি হয়।

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ২৯ হাজার ৭ শত ৬৯ জন। ভোট প্রদান করেন ২ লাখ ৭ হাজার ৬ শত ৯৯ জন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেহের আফরোজ চুমকী বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ২৬ হাজার ২ শত ৯৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির এ কে এম ফজলুল হক মিলন। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৭৫ হাজার ১ শত ১৮ ভোট।

ADS BY ADSTERRA

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেহের আফরোজ চুমকী বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় বিজয়ী হন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে র্নিবাচনের দাবিতে, বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট এই নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেনি।

ADS BY ADSTERRA

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ৩ লাখ ২ হাজার ৫ শত ৫৩ জন। ভোট প্রদান করেন ২ লাখ ৪৪ হাজার ৩ শত ২ জন।


নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন ৫ জন। নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের মেহের আফরোজ চুমকী , ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির একেএম ফজলুল হক মিলন, লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির রাহেলা পারভীন শিশির, হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গাজী আতাউর রহমান, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির আমিনুল ইসলাম মাহমুদ প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন।


নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেহের আফরোজ বিজয়ী হন । নৌকা প্রতীকে তিনি পান ২ লাখ ৭ হাজার ৬ শত ৯৯ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির এ কে এম ফজলুল হক মিলন। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান মাত্র ২৭ হাজার ৯ শত ৭৬ ভোট। কারচুপির অভিযোগে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন বর্জন ও ফলাফল প্রত্যাখান করে।


পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, নবম, দশম ও একাদশ সংসদে আওয়ামী লীগ টানা বিজয়ী হয়।

ADS BY ADSTERRA

গাজীপুর-৫ সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্য মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আবারও মনোনয়ন চাইবেন। তার মনোনয়ন এক প্রকার নিশ্চিত। আওয়ামী লীগ থেকে আরও মনোনয়ন চাইবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি আক্তারুজ্জামান।

বিএনপি থেকে মনোনয়ন চাইবেন সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির গাজীপুর জেলা সভাপতি এ কে এম ফজলুল হক মিলন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মনির হোসেন।

জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন চাইবেন, পার্টির কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য আজম খান অথবা তার স্ত্রী কালিগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি রাহেলা পারভীন শিশির এবং জাতীয় শ্রমিক পার্টির কেন্দ্রীয় সভাপতি আনোয়ারা বেগম।


তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই আসনে আওয়ামী লীগের ভিত বরাবরই শক্ত। ২০০৮ সালের নবম সংসদ থেকে আসনটি আওয়ামী লীগের দখলে। এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য মেহের আফরোজ চুমকি দক্ষতা, যোগ্যতা ও সততার মাধ্যমে এলাকায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। চুমকির বাবা মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ময়েজ উদ্দিন এ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এই ঘনিষ্ঠ সহযোগী আওয়ামী লীগের বৃহত্তর ঢাকা অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ১৯৮৪ সালে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়ে শহীদ হয়েছিলেন ময়েজ উদ্দিন। বাবার আদর্শ অনুসরণ করেই জনকল্যাণমুখী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন মেহের আফরোজ চুমকি। এলাকায় দৃশ্যমান ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড করেছেন তিনি। এ আসনে জয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চাইছে আওয়ামী লীগ।

অন্যদিকে, আসনটি পুনরুদ্ধারে বদ্ধপরিকর দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাহিরে থাকা বিএনপি। সাংগঠনিক দূর্বলতা ও অভ্যন্তরীণ বিরোধ নিয়ে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে একধরনের টানাপোড়েন রয়েছে। সেদিক থেকে আওয়ামী লীগ অনেকটাই নির্ভার।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হলে জাতীয় সংসদের ১৯৮তম সংসদীয় আসন (গাজীপুর- ৫) আসনটিতে আওয়ামী লীগকে ফেবারিট বলে মনে করেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।

কোন মন্তব্য নেই